বাংলাদেশ
ইসিকে ১ সপ্তাহের আল্টিমেটাম
এনআইডিতে ছবি থাকায় ভোটার হননি লক্ষাধিক নারী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০৬:১১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
FacebookTwitterEmailWhatsAppLinkedInMessengerShare
এনআইডিতে ছবি থাকায় ভোটার হননি লক্ষাধিক নারী
ছবি : সংগৃহীত
পাঁচ বছর আগে ভোটার হয়েছেন শিক্ষার্থী সারা সামিনুর। কিন্তু এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র করতে পারেননি, কারণ এটা করতে ছবি দরকার হয়। আর পর্দাশীল এই নারী ছবি তুলতে রাজি নন। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় কোন নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেন না তিনি। তাই ছবি ছাড়া শুধু আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।
এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘বিলম্বে মুখের ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে এনআইডি কার্ড চাই। মহিলা কর্মী দ্বারা ফিঙ্গারপ্রিন্টের এর ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক চাই।’
সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিস নির্বাচন ভবনের সামনে একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন মহিলা আঞ্জুমানের আরো কয়েকজন নারী সদস্য। এসময় স্লোগানে স্লোগানে তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কথা তুলে ধরেন।
আরেক আন্দোলনকারী বলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার, স্বামীর সম্পত্তির অধিকার এবং আমাদের বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে ভর্তির অধিকার, সেটাই তো পর্দানশীল নারীরা পাচ্ছে না।’
অন্য একজন বলেন, ‘আমি কেন একটা পুরুষকে আমার মুখ দেখাবো, যেটা কিনা আমার পর্দার অন্তর্ভুক্ত। এখানে হচ্ছে মেয়েটা দেখানোর কারণে তার একটা গুনাহ, সে বেপর্দা হচ্ছে। এখন আমরা যখন ছবি তুলবো, আমাদের মুখটাও দেখাবো, ছবিও তুলবো, তখন কিন্তু আমরা মহিলারা দুইটা গুনাহ’য় গুনাহগার। একটা আল্লাহ পাক উনার সাথে শির্ক করতেছি, আরেকটা হইতেছে এই বেপর্দা যে হচ্ছে, আমার মুখ যে খোলা হচ্ছে, এটার কারণে আমি কিন্তু গুনাগার হয়ে যাইতেছি, আমার কিন্তু সেই কারণে কবিরা গুনাহ হইতেছে।’
সমাবেশ থেকে মহিলা আঞ্জুমানের আহবায়ক অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে শুধুমাত্র ছবির অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের পরিচয়পত্র আটকে রাখা হয়েছে, যা এক ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি আদায় না হলে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তিনি।
তাদের দাবি তিনটি হলো-
এক, বিগত ১৬ বছর যাবত যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীল নারীদের মানবাধিকার হরণ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা।
দুই, পর্দানশীল নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসি অধিকার অক্ষুন্ন রেখেই অবিলম্বে এনআইডি প্রদান করা।
তিন, পর্দানশীল নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ায় জন্য মহিলা অফিস সহকারী বাধ্যতামূলক করা।
তারা বলেন, এই দাবির পক্ষে আমাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন উক্ত দাবিসমূহ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পূরণের আশ্বাস দিবেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিবেন। অন্যথায় দেশব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমান মহিলারা পর্দানশীল নারীদের পক্ষে আন্দোলনে নামবে ইনশাআল্লাহ।
পরে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, তাদের ভাষায়, গত ১৬ বছর ধরে নাগরিক অধিকার হরণ করা কর্মকর্তাদের বিচারসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
মহিলা আঞ্জুমানের সভাপতি বলেন, স্মারকলিপি জমা দিয়েছি এবং তিনি আমাদের এই স্মারকলিপিটা চিফ ইলেকশন কমিশনার, উনার কাছে পৌঁছে দিবেন বলেছেন। এবং উনারা আমাদের বিষয়টা বিশেষ গুরুত্বের সাথে উনাদের যে মিটিং আছে, সেখানে উনারা উপস্থাপন করবেন, যেন পর্দানশীল নারীদেরকে একটা বিশেষ ব্যবস্থা দেওয়া হয়, সে বিষয়ে উনারা আলোচনা করবেন।
মুখের ছবি ছাড়া শুধু আঙ্গুলের ছাপের ভিত্তিতে নারীদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর আগে আন্দোলন করেছে সংগঠনটি।
Tags
সারাদেশ